আজকের এই ডিজিটাল যুগে পাওয়ার ব্যাংক একটি অত্যাবশ্যকীয় ডিভাইস। মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, কিংবা অন্যান্য গ্যাজেটগুলির ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যায়, তখন পাওয়ার ব্যাংক সেই ডিভাইসগুলোকে চার্জ করতে সাহায্য করে।
পাওয়ার ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে এর সার্কিট বোর্ড। এই আর্টিকেলে, আমরা জানবো পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট কী, এর মূল কাজ কী, এবং পাওয়ার ব্যাংক সার্কিটের দাম কত।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট কী?
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট হচ্ছে সেই মাদারবোর্ড বা চিপ যা পাওয়ার ব্যাংককে কাজ করতে সাহায্য করে। এটি একটি ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা ব্যাটারি এবং আউটপুট পোর্টের মধ্যে কার্য পরিচালনা করে।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট নির্ধারণ করে কিভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হবে, কতটুকু চার্জ দেবে, এবং ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ হলে তা বন্ধ করে দেয়।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিটের মূল কাজ
১. চার্জ ম্যানেজমেন্ট: পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট ডিভাইসের চার্জ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে এবং ব্যাটারির অতিরিক্ত চার্জ হওয়া রোধ করে।
২. আউটপুট ম্যানেজমেন্ট: সার্কিট আউটপুটের ভোল্টেজ এবং কারেন্ট ম্যানেজ করে, যাতে ডিভাইসের সঠিক চার্জিং গতি নিশ্চিত হয়।
৩. সুরক্ষা: সার্কিটের মধ্যে ওভারলোড এবং শর্ট সার্কিট প্রটেকশন ফিচার থাকে যা ডিভাইসকে সুরক্ষিত রাখে।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিটের দাম কত?
বাংলাদেশে পাওয়ার ব্যাংক সার্কিটের দাম নির্ভর করে এর ক্ষমতা, আউটপুট ভোল্টেজ, এবং মানের ওপর। বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও নির্মাতার উপর ভিত্তি করে দাম পরিবর্তিত হতে পারে।
সাধারণত পাওয়ার ব্যাংক সার্কিটের দাম রেঞ্জ:
- ১০০ টাকার কম: সস্তা সার্কিট যা সাধারণত নন-ব্র্যান্ডেড বা কম মানের পাওয়ার ব্যাংকে ব্যবহৃত হয়।
- ১০০ থেকে ২০০ টাকা: মাঝারি মানের সার্কিট, যা সাধারণ পাওয়ার ব্যাংকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ২০০ থেকে ৫০০ টাকা: এই দাম রেঞ্জের সার্কিটগুলো সাধারণত ভালো মানের এবং বেশি সুরক্ষার সাথে আসে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার ব্যাংকে এসব সার্কিট ব্যবহৃত হয়।
- ৫০০ টাকা বা তার বেশি: প্রিমিয়াম মানের সার্কিট, যা ব্র্যান্ডেড এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার ব্যাংকে ব্যবহার করা হয়।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট কেনার সময় যা মাথায় রাখা উচিত
১. ক্ষমতা: সার্কিটের আউটপুট ক্ষমতা দেখে নিশ্চিত হোন যে তা আপনার ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
২. ব্র্যান্ড: ব্র্যান্ডেড সার্কিট সাধারণত বেশি নির্ভরযোগ্য এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
৩. সুরক্ষা ফিচার: ওভারলোড প্রটেকশন, ওভারচার্জ প্রটেকশন ইত্যাদি ফিচার রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৪. ওয়ারেন্টি: ব্র্যান্ডেড সার্কিটে সাধারণত ওয়ারেন্টি দেওয়া হয়। ওয়ারেন্টি থাকা সার্কিটগুলো কেনা বেশি নিরাপদ।
কোথায় পাওয়া যায় পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট?
অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং ইলেকট্রনিক্স দোকানে পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট পাওয়া যায়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অনলাইন স্টোর হলো:
- দারাজ বাংলাদেশ
- পিকাবো
- আজকের ডিল
- স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স বাজার
এই স্টোরগুলোতে সার্কিটের মডেল, দাম এবং বৈশিষ্ট্য সহজে চেক করা যায় এবং বাড়িতে বসে কেনা যায়।
কোন পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট আপনার জন্য সঠিক?
আপনার ব্যবহারের ধরন এবং ডিভাইসের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সঠিক সার্কিট বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি মাঝারি মানের ডিভাইস ব্যবহার করেন, তবে ১০০-২০০ টাকার মধ্যে পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট যথেষ্ট।
তবে যদি আপনার প্রয়োজন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার ব্যাংক, তাহলে প্রিমিয়াম মানের সার্কিটের দিকেই নজর দেওয়া উচিত।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া
যদি আপনি নিজে একটি পাওয়ার ব্যাংক তৈরি করতে চান, তাহলে কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করতে পারেন:
- সার্কিট সংগ্রহ: সঠিক সার্কিট মডেল সংগ্রহ করুন।
- ব্যাটারি সংযুক্তি: সার্কিট বোর্ডে ব্যাটারি সংযুক্ত করুন।
- ইনপুট এবং আউটপুট পোর্ট সংযুক্তি: চার্জিং পোর্ট এবং আউটপুট পোর্ট সংযুক্ত করুন।
- টেস্ট: সব কিছু ঠিক আছে কিনা যাচাই করতে সার্কিটটি একবার টেস্ট করে দেখুন।
পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট কেনার সুবিধা এবং অসুবিধা
সুবিধা:
- সহজেই পাওয়া যায়
- স্বল্প মূল্যে নিজস্ব পাওয়ার ব্যাংক তৈরি করা যায়
- কাস্টমাইজেশনের সুবিধা থাকে
অসুবিধা:
- নিম্নমানের সার্কিট ব্যবহারে ঝুঁকির সম্ভাবনা
- নিজে ইনস্টল করতে গেলে ভুলে ডিভাইস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
উপসংহার
বাংলাদেশে পাওয়ার ব্যাংক সার্কিটের দাম এবং এর ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার মাধ্যমে আপনি নিজের জন্য সঠিক সার্কিটটি বেছে নিতে পারবেন। এটি কেবল আপনার পাওয়ার ব্যাংককে শক্তিশালী করবে না, বরং সুরক্ষাও নিশ্চিত করবে।
মনে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানান।